চুল পড়ার কারণ এবং তার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

চূল পড়ার অনেক কারন আছে। যদি কেউ এই সমস্যায় আক্রান্ত হন তাদের জেনে নিতে হবে এর আসল কারন কি ?
তবে কারন সম্পর্কে জানা থাকলে এর সু-চিকিৎসা যেমন পাওয়া যাবে তেমনি প্রতারণা হতে বাঁচা যাবে। আজকাল অনেক বাহারি তেল আবিস্কার হয়েছে যেগুলো ব্যবহার করলে আরও সমস্যা বাড়বে বৈ উপকার কিছুই হবেনা।
দয়াকরে আপনারা ঐ ভুয়া টোটকা চিকিৎসা থেকে বিরত থাকুন।



প্রথমে আসা যাক চুল পড়ার কারন কি কি?
(ক) প্রথমত যারা প্রচুর গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ভুগেন। অল্প কিছু খেলেই যাদের গ্যাস হয়।
(খ) বংশগত কারনেও হয়।
(গ) চর্ম রোগ, যেমন একজিমা, সোরায়সিস, ইত্যাদি কঠিন চর্ম রোগে ভুগলে।
(ঘ) পুষ্টির অভাব থেকেও হয়।
(ঙ) হরমোন সমস্যার কারনেও হয়।
(চ) উচ্চশক্তিসম্পন্ন বা তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রয়োগ করে রোগের চিকিৎসা অথবা কেমোথেরাপি - ক্যান্সারের মত নির্দিষ্ট কিছু রোগে গুরুতর চুলের ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়।
(ছ) রজঃনিবৃতি কাল - রজঃনিবৃতি কালে মহিলাদের চুল পড়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।
(জ) আগুনে পুড়ে গেলে সেই স্থানে চুল না গজানো স্বাভাবিক ব্যাপার।
(ঝ) তাছাড়া নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ গ্রহণ, উচ্চ জ্বর, রক্তক্ষরণ, মূত্রাশয় কর্মহীনতা ইত্যাদি কারণে চুল পড়ে যেতে পারে।

প্রতিকারঃ-
নিম্নলিখিত খাবারগুলো নিয়মিত খেলে চুল পড়া কমতে পারে-
১) গাঢ় সবুজ শাক-সবজি খেতে হবে যাতে রয়েছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-ই আছে, যা natural conditioner হিসেবে কাজ করবে ।
২) শিমের বিচি, মটর শুটি, বরবটি ইত্যাদ যা প্রোটিনের ভালো উৎস। এছাড়াও আয়রণ, জিঙ্ক ও বায়োটিন আছে যা চুল ভেঙ্গে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
৩) লাল চাললাল আটা খেতে হবে যাতে জিঙ্ক, আয়রণ ও ভিটামিন-বি পাওয়া যায়।
৪) কাঠ বাদাম, কাজু বাদাম, খেলে ভাল কাজ করে।
৫) খাবার তালিকায় প্রথম শ্রেণীর প্রোটিন যেমন-মুরগী, ডিম রাখতে হবে।
৬) কম চর্বি যুক্ত দুধে ক্যালসিয়াম আছে, যা চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যাবশকীয় উপাদান।
৭) গাজর ভিটামিন-এ এর ভাল উৎস যা প্রতিদিন সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়।



পালনীয়ঃ
ক) প্রতিদিন একজন পুরুষ দিনে ১৮ গ্লাস করে পানি পান, আর মেয়েরা প্রতিদিন ১২ গ্লাস করে পানি করলে অনেক উপকার হয়।
খ) প্রতিদিন মাথায় তেল ব্যবহার করা। আজকাল আধুনিক ছেলে মেয়েরাতো মাথায় তেল ব্যবহার করেনা। মাথা শুষ্ক রাখাটাও চুল পড়ার একটি কারন।
গ) বিদেশী শ্যাম্পু ব্যবহার না করা।
ঘ) যে কোন কালার বা কলপ ব্যবহার না করা। মেহেদী ব্যবহার করতে পারে।
ঙ) চুলে হিট দিয়ে স্টাইল করা। আজকালতো সেলুনে বা পার্লারে বিভিন্ন স্টাইল করা হয় কালার বা হিট দিয়ে, যা চুলের জন্য ক্ষতিকর।

হোমিও চিকিৎসাঃ-
সঠিক চিকিৎসার জন্য অবশ্যই রোগীকে একজন যোগ্যতাসম্পন্ন ও রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারন হোমিওপ্যাথি কোন রোগের চিকিৎসা করেনা। লক্ষন সমষ্টি দেখেই চিকিৎসা করা হয়। 
বিষয়টি নিয়ে কোন চিন্তা না করে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে অবশ্যই ভাল রেজাল্ট আশা করা যায়। যাদের প্রতিদিন ২০/৩০ টি করে চুল পড়ে তাদের চিন্তার বিষয়, এভাবে প্রতিদিন চুল পড়তে থাকলে একদিন টাক হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই সময় থাকতে ভাল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিলে সমাধান মিলবে।
তাছাড়া চুল হচ্ছে মানবের সুন্দর দেখার একটি বিষয়। সেটা যদি কেউ হেলায় নষ্ট করে ফেলেন তাহলে কষ্টের বিষয়। আর যারা মাথার চুলের জন্য বিয়ে করতে পারছেননা তাদের বলব খুব দ্রুত একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিন আল্লাহর রহমতে সমাধান মিলবে।
আমাদের পোস্ট যদি আপনার ভাল লাগে এবং উপকারে আসে, তাহলে পোস্টগুলোতে নিয়মিত লাইক কমেন্ট করে আমাদের সাথেই থাকুন। আপনার যেসমস্ত পোসস্ট ভাল লাগে, তা অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেননা।

ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন। এই কামনায়.....................

ডাঃ মোঃ সোহেল রানা
বি এস-সি, এম এস-সি (রসায়ন)
ডি এইচ এম এস (ঢাকা)
মোবাইল নং ০১৭৮৬-৩৯০৬৯০





Comments

Popular posts from this blog

ছন্দে ছন্দে পর্যায় সারণীর বিভিন্ন মৌলের নাম

জন্মের পরে মাতৃদুগ্ধ পানে উপকারিতা

যৌন সমস্যা ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা।